ফরিদপুরে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ফরিদপুরের মল্লিকপুরে দু’টি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে বাসের সুপারভাইজার, হেলপারসহ পাঁচজন নিহত হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ২৭ জন। এর মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের উদ্ধার করে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতরা সকলে খাগড়াছড়ি পরিবহন বাসের যাত্রী।
গতকাল মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে ফরিদপুর সদরের কানাইপুরের মল্লিকপুর এলাকায় এ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের সরা গ্রামের আবু বক্কর (৫৫), জাবাইল গ্রামের বাবু (৪০), মাগুরা জেলার সদর উপজেলার বরই গ্রামের পিকুল, খাগড়াছড়ি পরিবহন বাসের সুপারভাইজার মোঃ মহসিন (৩৫) ও হেলপার বাজারগ্রামের নাহিদ কারিগর (১৯)। তাদের বাড়ি শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর ও বাজার গ্রামে।
আহতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভাটায় শ্রম দেয়ার উদ্দেশ্যে একটি বাস ভাড়া করে সাতক্ষীরা থেকে ইটভাটা শ্রমিকরা খাগড়াছড়ি পরিবহন নামের বাসে করে ৩৫ থেকে ৪০ জন শ্রমিক ঢাকায় যাচ্ছিলো। পথিমধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এসময় অধিকাংশ যাত্রী ঘুমিয়েছিল।
ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন জানান, ঢাকার আব্দুল্লাপুর থেকে ঝিনাইদহগামী গ্রীণ এক্সপ্রেস নামে যাত্রীবাহী একটি বাসের সাথে বিপরীত দিক সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে ছেড়ে আসা খাগড়াছড়ি পরিবহন নামে অপর একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। নিহতদের সকলে খাগড়াছড়ি পরিবহনের যাত্রী ছিল। গ্রীণ এক্সপ্রেস বাসটি অসতর্কতাবশত বিপরীত লেনে চলে গেলে এসময় বিপরীত দিক থেকে আসা বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মাহমুদুজ্জামান জানান, ভোরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ থেকে ৩২ জন আহতদের ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ২৭ জনকে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে ৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদের মধ্যে একজনকে ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। এদিকে দুপুর বারোটার দিকে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে প্রশাসনের কর্মকর্তারা ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে হতাহতদের খোঁজখবর নেন।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান মোল্লা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, মহাসড়কে দুটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে হতাহতদের পাশে দাঁড়াতে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা ও আহত ১৭ জনকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়।
পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল ভবিষ্যৎ দুর্ঘটনা এড়াতে দূরপাল্লার গাড়িগুলোতে দুইজন চালক দেয়ার বিষয়ে শ্রমিক সংগঠনের সাথে পরামর্শ করা হবে বলে দাবী করেন।
দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান জেলা বিএনপি নেতার আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইসা ও জেলা জামায়াতের আমীর মোঃ বদর উদ্দিন আহমেদসহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তারা সাধ্যমতো আহতদের সাহায্য-সহযোগিতাও করেন।