সিরাজগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে পলিনেট হাউজে সবজি চাষ

রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জে পলিনেট হাউজে সবজি চাষে লাভের মুখ দেখছে কৃষকেরা। এ পদ্ধতিতে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার একডালা গ্রামে পলিনেট হাউজে সবজি চাষ শুরু করেছেন শহিদুল ইসলাম। আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার একডালা গ্রামে ১২ শতক জমির উপর একটি পলিনেট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পলিনেট হাউজে ট্রপিকানা জাতের ব্রকলি ও কিরণ জাতের ফুলকপির চাষ করেছেন। এছাড়া মূলা ও ধনিয়ার আবাদ করা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পলিনেট হাউজে উচ্চমূল্যের ফসল যেমন- ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, রকমেলন, রঙ্গীন তরমুজ, রঙ্গীন ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসসহ অন্যান্য অফ সিজন সবজির পাশাপাশি চারা উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এর ফলে সবজি চাষে যেমন বৈচিত্র্যতা এসেছে তেমনি অনেকেই আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান পেয়েছে। এই পদ্ধতিতে পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় এতে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশে বাধা পায় এবং অতি বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দূর্যোগেও ফসল অক্ষত থাকে।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, পলিনেট হাউজে ফসলের উৎপাদন ২০% বাড়ে পাশাপাশি পোকামাকড়ের আক্রমণ ৭০% কম হয়। প্রাথমিকভাবে খরচ কিছুটা বেশি হলেও এতে উৎপাদন খরচ কম হয়। আর নিরাপদ ফসল উৎপাদন সহজ হয়। পলিনেটে সুস্থ সবল চারা উৎপাদন করা যায় এবং উচ্চমূল্যের ফসল উৎপাদন করে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, কৃষি বিভাগের সহায়তায় আমি প্রথম এই পদ্ধতিতে চাষ শুরু করি। এ বছর আমি ১২ শতক জমিতে ট্রপিকানা জাতের ব্রকলি ও কিরণ জাতের ফুলকপির চাষ করেছি। ইতিমধ্যেই চারাগুলি বেশ বেড়ে উঠেছে। এতে আমার খরচ হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। আশা করছি, ৫০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরো জানান, সারা বছর এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে আমরা লাভবান হচ্ছি।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার সাদাত জানান, পলিনেট হাউজ (গ্রীণহাউস) ভারী বৃষ্টিপাত, তাপ, কীটপতঙ্গ, ভাইরাসজনতি রোগ ইত্যাদির মতো প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ শাকসবজি ফলমূলসহ কৃষি পণ্য উৎপাদন করার এক আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে ফসলের চাষ করলে ফসলে রোগবালাই ও পোকার আক্রমণ কম হয় এবং এ সংক্রান্ত খরচও কম হয়। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউজ দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে শীতকালীন সবজিগুলো যেমন সহজেই গ্রীষ্মকালে উৎপাদন করা যায়, তেমনি গ্রীষ্মকালের সবজিও শীতে উৎপাদন করা যায়। পলিনেট হাউজে চাষাবাদ কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রার সৃষ্টি করেছে।