তেঁতুলিয়া ইকো পার্কে কুকুরের কামড়ে চিত্রা হরিণের মৃত্যু

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া ইকো পার্কে কুকুরের কামড়ে মৃত্যু হলো একটি চিত্রা হরিণের। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত ফাঁস হয়ে গেলো ঘটনাটি। গত শনিবার সকালে জেলা সামাজিক বনবিভাগের উদ্যোগে পরিচালিত ইকো পার্কটিতে তিনটি হরিণের মধ্যে একটি হরিণকে কুকুর নির্মমভাবে কামড়িয়ে আহত করলে চিকিৎসার অভাবে শেষ পর্যন্ত মারা যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, আহত হরিণটির চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি গোপন করার চেষ্টা করছেন তারা।
তবে বনবিভাগ বলছে, কুকুরের কামড়ে নয় ইকো পার্কের ভেতরে ঢুকে পড়া একটি ভারতীয় কুকুরের তাড়া খেয়ে আহত হয়ে হরিণটির মৃত্যু হয়েছে। মৃত হরিণটির ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানায়, গত শনিবার সকালে হরিণের ঘেরার নিচ দিয়ে কয়েকটি কুকুর প্রবেশ করে তুলনামূলক দুর্বল ওই হরিণটির উপর আক্রমণ করে বসে। এতে মারাত্মক আঘাত পায় হরিণটি।
প্রাণী সম্পদ অফিসের সার্জন চিকিৎসক ডাঃ রতন কুমার ঘোষ জানান, হরিণের গলায় ৫/৬টি কুকুর কামড় দেয়। এতে শ্বাসনালীতে ক্ষত হয়। পরে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়ায় হরিণটির মৃত্যু হয়।
উপজেলা বিট অফিসার সাইদুর রহমান বলেন, সীমান্ত পার হয়ে ভারতীয় ৫/৬টি বন্য কুকুর আসে। খাঁচার একপাশে মাটি গর্ত করে ভিতরে প্রবেশ করে পুরুষ হরিণটিকে কামড় দেয়। এতে হরিণটি গুরুতর আহত হয়। এসময় প্রাণিসম্পদ অফিসে খবর দিলে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা চিকিৎসা সেবা প্রদান করে শেষে তিনি মৃত ঘোষণা করেন।
পরে বনবিভাগের লোকজন কুকুর তাড়ালেও আহত হরিণটি চিকিৎসার কোন উদ্যোগ নেয়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায় আহত চিত্রা হরিণটি। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় অপর দুই হরিণ। এ ঘটনার পরপরই বিষয়টি গোপন করার জন্য তৎপর হয়ে উঠে বন বিভাগের কর্মকর্তারা। সাজানো হয় গল্প।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ইকো পার্কের পার্শ্ববর্তী এক বাসিন্দা জানান, পাঁচটি কুকুর কামড়ে ধরেছিল হরিণটিকে। এতে আহত হলেও তারা চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ঘাড়, পা ও পিঠে মারাত্মকভাবে জখম হয়েছিল হরিণটির। ইকো পার্কের কর্মীদের দায়িত্বে অবহেলার কারণেই প্রাণ গেলো এই প্রাণিটির।
সামাজিক বন বিভাগ পঞ্চগড়ের রেঞ্জ কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন বলেন, ইকো পার্কের ভেতরে ঢুকে পড়া একটি ভারতীয় কুকুরের তাড়া খেয়ে আহত হয়ে হরিণটির মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে। হরিণটির বয়স দেড় বছরের মতো। হরিণ খুব ভীতু প্রাণী। এ ঘটনায় আমি নিজেই তদন্ত করবো। দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।