কুমিল্লা প্রতিনিধি
গত ৭ জানুয়ারি কাজী আব্দুর রকিব (৬২), পিতা-মৃত কাজী আব্দুল হাকিম, সাং-মধ্যম আশ্রাফপুর, থানা-সদর দক্ষিণ, জেলা-কুমিল্লা র্যাব-১১ এর সিপিসি-২, কুমিল্লার নিকট তার ছেলে মোঃ কাজী ওমর শরীফ সোহেল (৩২) নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা একটি ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং মাঠপর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ১০ জানুয়ারি রাতে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার শাসনগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ধৃত আসামী মোঃ সোহরাব হোসেন বিপ্লব (৩২), পিতা-মৃত শফিউল্লাহ, সাং-লাউকড়া, থানা-হাজিগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর (এ/পি রেইসকোর্স ধানমন্ডি রোড কোতয়ালী কুমিল্লা) কে মুক্তিপণের ১৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকাসহ গ্রেফতার করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ভিকটিম মোঃ কাজী ওমর শরীফ সোহেল (৩২) কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত অপহরণকারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মোঃ কাজী ওমর শরীফ সোহেল (৩২) এর সাথে ধৃত আসামী মোঃ সোহরাব হোসেন বিপ্লব (৩২) এর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল এবং ধৃত আসামী মোঃ সোহরাব হোসেন বিপ্লব (৩২) আগে থেকে জানতো ভিকটিম মোঃ কাজী ওমর শরীফ ওরফে সোহেল (৩২) অর্থনৈতিকভাবে একজন সচ্ছল ব্যক্তি ও সরল মনের মানুষ। সেই সুবাদে ধৃত আসামী ভিকটিমের সাথে আরও গভীরভাবে সম্পর্ক তৈরী করাসহ কতিপয় কিছু ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে খুব সহজেই অতি মাত্রায় অর্থনৈতিক সুবিধা পাওয়ার লোভ দেখায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৭ জানুয়ারি অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসার কথা বলে বিপুল পরিমাণ টাকা নিয়ে তার কাছে চলে আসতে বলে। ভিকটিম মোঃ কাজী ওমর শরীফ সোহেল অতি সহজ সরল মনোভাবের হওয়ায় ধৃত আসামীর কথার প্রলোভনে পড়ে নগদ আনুমানিক ১৭ লক্ষ টাকা নিয়ে তার নিজ বাড়ি কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ থানার মধ্যম আশ্রাফপুর গ্রাম হতে ধৃত আসামী মোঃ সোহরাব হোসেন বিপ্লব এর ভাড়া বাসা কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার রেইসকোর্সের বাসায় যায়। সেখানে ধৃত আসামী ভিকটিমের বিপুল পরিমাণ অর্থ দেখে নিজেকে সামলাতে না পেরে ভিকটিমের অর্থ আত্মসাৎ করার ফন্দি করতে থাকে এবং ভিকটিমকে খাবারের সাথে বিভিন্ন প্রকার ঔষধ সেবন করায়। যার কারণে ভিকটিম শারীরিকভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে এবং অতিরিক্ত ঘুমে অচেতন হয়ে থাকে। ভিকটিম শারীরিকভাবে অসুস্থ বোধ করা এবং ঘুমে অচেতন থাকায় তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি বিধায় ভিকটিমের বাবা কাজী আব্দুর রকিব (৬২) ভিকটিমকে বিভিন্ন জায়গায় খুঁজতে থাকে এবং থানায় জিডি করে জিডির কপিসহ ৯ জানুয়ারি র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। র্যাব বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করছে এমন তথ্য আসামী আঁচ করতে পেরে ভিকটিমকে তার ভাড়া বাসা থেকে সরিয়ে চাঁদপুরের দিকে নিয়ে যায় এবং ভিকটিমকে অচেতন অবস্থায় চাঁদপুর জেলার হাজীগঞ্জ থানা এলাকায় ফেলে রেখে নিজে বাসায় চলে আসে। উক্ত বিষয়ে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২, কোম্পানী অধিনায়ক উপ-পরিচালক মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন বলেন, অপহরণকারীদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
