কমলগঞ্জে আউশ ধান ঘরে তুলতে কৃষকেরা ব্যস্ত, মাঠে চলছে উৎসব

সোহেল রানা, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে রাস্তায় ও মাঠে আউশ ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষকেরা। চলছে এখন আউশ ধান ঘরে তোলার উৎসব। মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ বৃষ্টিপাতের দেখা না মিললেও ধান তুলতে আনন্দে রয়েছেন কৃষক কৃষাণীরা। অন্যান্য সময়ে হাওর, বাওড়, নদী-নালা, খালবিল পানিতে ভরপুর থাকলেও এ বছরে বর্ষার কোন চিরচেনা রূপ দেখা যায়নি। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কৃষক জমিতে আউশ ধানের চারা রোপণ করছিলেন। ফলে ভাল ফসলও পেয়েছেন। অন্যদিকে উপজেলার বহু কৃষক বৃষ্টি ও সেচের সংকটে আউশ চাষ করতে পারেননি। এবার বিরূপ আবহাওয়ার পর সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে আউশের ফলন ভালো হওয়ায় অবশেষে কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কেউ কেউ ধান কাটার প্রস্তুুতি নিতে শুরু করেছে। আবার কেউবা ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য রোদে শুকাচ্ছেন। জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে এ বছর আউশের চাষ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার কম জমিতে আউশ ধান চাষ করা হলেও এবার ফলন ভাল হয়েছে গত বছরের চেয়ে বেশি। সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সার, পোকামাকড় ও আগাছা দমনসহ সকল বিষয়ে উপযুক্ত সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে চাষীদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। যে কারণে এ বছর আউশ ধানের ভাল ফলন হয়েছে। সদর ইউনিয়ন, শমশেরনগর, রহিমপুর, মুন্সিবাজার, পতনঊষার ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় আউশ ধান ঘরে তুলতে কৃষক-কৃষাণী কারও যেন একটুও অপেক্ষা নেই। চারদিকে এখন ধান কেটে ঘরে তোলার প্রতিযোগিতা। আকাশে ঝড়ের কালো রং দেখলেই কৃষক তাড়াতাড়ি ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত। কৃষক-কৃষাণী ও অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে নিজ নিজ জমির আউশ ধান কর্তন করছেন, কেউ আবার মেশিনের মাধ্যমে মাড়াই করছেন, খড় থেকে ধান ছাড়াচ্ছেন, কোথাও আবার রাস্তায় খড় ও ধান রোদে শুকাচ্ছেন। মুন্সিবাজারের কৃষক আব্দুস ছামাদ জানান, পানির অভাবে অনেক ক্ষতি হয়েছে। ৩ একর জমিতে আউশ ধান চাষে ফলনও ভাল হয়েছে। ধান তুলতে ও শুকাতে কিছুটা কষ্ট পেতে হচ্ছে। আকাশে কিছু সময় বৃষ্টি আবার কিছু সময় রৌদ্র এবং বৃষ্টির পানিতে উঠান ভেজা থাকায় আমাদের ধান শুকাতে সমস্যা হচ্ছে। শমশেরনগর ইউনিয়নের কৃষক আব্দুল বারী, মছদ্দর আলী, আবুল কাশেম ও আমির আলী জানান, বষার্র ভরা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রায় ১০ একর আউশ জমি চাষাবাদ করতে পারেনি। আউশের চারা রোপণে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তবে অল্প অল্প বৃষ্টিপাতের মাঝে ৫ একর আউশ জমি চাষ করেছি তাতে ফসল ভাল হয়েছে। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে আরও কিছু জমি চাষ করা যেতো। উপজেলা কৃষি সস্প্রসারণ অফিসার বিশ্বজিৎ রায় বলেন, কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠতে সার, সেচ, পোকামাকড় ও আগাছা দমনসহ সকল বিষয়ে সঠিক সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে চাষীদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। এ কারণে অল্প বৃষ্টির প্রতিকূলতা কাটিয়ে আউশ ধানের ভাল ফলন হয়েছে।