নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া-লৌহজং-বালিগাঁও সড়কটির বেহাল দশা। এই সড়কটি এখন জনগণের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যানজট আর সড়ক দূর্ঘটনা এখন এই সড়কে নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাওয়া থেকে লৌহজং হয়ে বালিগাঁওয়ের দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলোমিটার। সেখানে লৌহজংয়ের মালিরঅংক বাজার আর বালিগাঁও বাজারের দুটি পয়েন্টে যানজটে পড়লে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার পথচারী চলাচল করে এবং এই সড়ক দিয়ে লৌহজং ও শ্রীনগর উপজেলার লোকজন মুন্সীগঞ্জ আদালত পাড়া এবং জেলা পরিষদসহ টঙ্গীবাড়ী ও লৌহজং উপজেলাসহ দুইটি উপজেলা পরিষদে, তিনটি হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ সব প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের একমাত্র সড়কটির এখন বেহাল দশা। মাঝেমধ্যে সড়কের কিছু অংশে কার্পেটিং করা হলেও মূল সড়ক খানাখন্দে ভরা আর বেহাল দশা। সামান্য একটু বৃষ্টি হলে বোঝার উপায় থাকেনা এটি কোন সড়ক নাকি মিনিখাল। প্রতিদিন যানজট আর সড়ক দূর্ঘটনায় মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মালিরঅংক বাজারের ব্যবসায়ী মোঃ স্বপন জানান, রাস্তার এই দুর্দশা দেখে অনেকেই বাজারে আসতে চায়না। এখন বাজারে ক্রেতা কমেছে অনেক। ঘোড়াদৌড় বাজারের ব্যবসায়ী নীল কমল রনি দাস বলেন, সামান্য একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি পানিতে তলিয়ে যায়। বোঝার উপায় থাকেনা মূল সড়ক কোনটি। তাই প্রতিদিন অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। বালিগাঁও বাজারের ব্যবসায়ী রিপন শেখ বলেন, এই একটি সড়কের জন্য আমরা ব্যবসায়ীরা এখন মরতে বসেছি। তার কারণ এখানে ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও ড্রেনগুলো ময়লা-অবর্জনা দিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি দ্রুত সরছেনা। তাই বৃষ্টি হলে আমাদের দোকানপাট বন্ধ রাখতে হয়। কারণ বৃষ্টির পানি সরতে না পেরে দোকানে উঠে যায়। রাস্তার পানি সরতে বেশ সময় লেগে যায়। মাওয়া থেকে লৌহজং হয়ে বালিগাঁও যেতে ১৪ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে দু’একটি জায়গায় দুই তিন ঘন্টা যানজটে বসে থাকতে হয়। সড়কের এই বেহাল দশা দেখে অনেক পথচারীর দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে নয় কিলোমিটার ঘুরে গন্ত্যব্যে পৌঁছানোর রেকর্ডও রয়েছে। বর্তমানে লৌহজংয়ের মালিরঅংক বাজার আর বালিগাঁও বাজার পথচারীদের কাছে এই দুটি বাজার আতঙ্কের নাম। যেখানে যেতে ঘন্টার পর ঘন্টা রিক্সা আর অটোতে বসে অপেক্ষা করতে হয়। এই দুই জায়গায় বেশ কয়েকবার সড়ক মেরামত করা হলেও কোন কাজে আসছে না। কারণ এই দুই জায়গার সড়কের দুইপাশে কোনরকম ড্রেনেজ ব্যবস্থা না করায় বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে যায় এবং খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়। এসব বাজারের দুইপাশে বড় বড় আকারের বেশ কয়েকটি মার্কেট তৈরী করা হয়েছে। যেখানে আগে বৃষ্টি হলে সহজে পানি খাল, বিল ও পুকুরে চলে যেত এখন এসব মার্কেট নির্মাণের ফলে পানি সরার কোন ব্যবস্থা না থাকায় সড়কটি সহজেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। আর খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়। এই বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিম রেজার সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই সড়কটির টেন্ডার হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দু’এক মাসের মধ্যে কাজটি ধরবে।
