বরগুনায় এতিমের পৈত্রিক সম্পত্তি ও বাড়ি-ঘর দখল

বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনার কামারহাট এলাকায় মিতা রানী শিল্পীসহ কয়েক প্রতারকের বিরুদ্ধে এতিমের বাড়িঘর ও পৈত্রিক জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা ও প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুধু বাড়ি-ঘর ও জমি দখলের চেষ্টা করে ক্ষান্ত হয়নি। এতিম তানজিদা আক্তার ও তার স্বামী মনিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় ও বরগুনা আদালতে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে মামলা দায়ের করেছে প্রতারক মিতা রানী শিল্পী। মিতা রানী শিল্পী ও চাচা মিজানুর রহমানের সাথে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ হলে তানজিদা আক্তার বরগুনা থানায় গিয়ে ঘটনার বিষয় জানিয়ে মামলা করতে চাইলে থানা পুলিশ মামলা না নিয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব চাচা মিজানর রহমান ও এনএসআই এর জয়েন্ট ডিরেক্টর চাচী খাদিজা আক্তার হেপীর সহায়তায় মিতা রানী শিল্পীর দায়েরকৃত মামলায় মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠায়। একের পর এক হয়রানি মুলক মিথ্যা মামলা ও প্রতিনিয়ত জীবন নাশের হুমকির শিকার হয়ে আসছে এতিম তানজিদা আক্তার, তার ১২ বছরের ভাই তহিদ রহমান সানিম ও তার বিধবা মা এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে।
তানজিদা আক্তার এর স¦ামী মনিরুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর তানজিদা আক্তার ও সানিম প্লাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে বরগুনা প্রেসক্লাব চত্তরে ও ডিসি অফিসের সামনে মানবন্ধন করে। অবশেষে বিষয়টি সঠিক তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া এবং হয়রানীর হাত থেকে বাঁচতে বরগুনার জেলা প্রশাসক বরাবরে ভুক্তভোগী তানজিদা আক্তার একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। গত শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর মিতা রানী শিল্পী তার বড় ভাই মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার হেপীর ক্ষমতা বলে শিল্পী তার পাঁচ বোন ও সন্ত্রাসী দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ কামারহাট গ্রামের মৃত তানভীর রহমান খোকনের মেয়ে তানজিদা আক্তার পৈত্রিক জমিতে থাকা দোকানপাট ভাংচুর করে লোপাট করে ও দখল করে।
সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার ৭নং কাঠালতলী ইউনিয়নের কামারহাট বাজারে মৃত: তানভীর রহমান খোকনের মেয়ে তানজিদা আক্তার এর ওয়ারিশি জমি নিয়া তার ফুফুরা ঝামেলা সৃষ্টি করলে চাচা মিজানুর রহমান কামারহাট বাজারের জমি ভাগ ভাটোয়ারা করে সীমানা নির্ধারন করে দেয়। উক্ত জমিতে তানজিদা আক্তার একটি দোকান ঘর তৈরি করে ভাড়া দেয়। ঐ দোকানঘর শিল্পীসহ তার সন্ত্রাসী দলবল নিয়া ভাংচুর করে জমি ও দোকান দখল করে।
কামারহাট বাজারের পাহারাদার শহিদুল বলেন, শিল্পী আমাকে তানজিদাদের দোকানঘরের কাছে যাইতে দেয় নাই। শিল্পী তার সন্ত্রাসী দলবল নিয়া দোকান ঘর লোপাট করে ও দোকান দখল করে। শিল্পী আমাকে বলে আপনি ঐদিকে দেখেন আমি এই দিকে দেখছি। শিল্পী ও তার সন্ত্রাসী দলবলের সামনে আমি যেতে সাহস পাই নাই।
তানজিদা আক্তার বলেন, আমার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে চাচা মিজানুর রহমান ও ফুফুরা সব সময় তাদের ক্ষতি করার সুযোগ খুজতে থাকে। চাচা ও ফুফুদের কাছে আমি পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাইলে তারা সম্পত্তি বুঝিয়ে না দিয়ে খুন জখম ও মিথ্যা মামলার হুমকি দেয়। ২০১৪ সালে চাচা মিজানুর রহমান ও ফুফু মিতা রানী শিল্পীসহ অন্যান্য ফুফুরা আমার বাবাকে দিনের পর দিন শারীরিক ও মানুষিক ভাবে অত্যাচার ও চাপ প্রয়োগ করে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে। এরপর এটাকে আত্মহত্যা বলে ডালাও ভাবে প্রচার করে তার সম্পত্তি ও বিল্ডিংসহ বসত বাড়ী দখল করে নিয়ে এত বছর পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধ করে যাচ্ছে তারা। চাচা মিজানুর রহমান ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার হ্যাপি দিনের পর দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে মিতা রানী শিল্পীর সহযোগীতায় তানজিদার বাবার পৈত্রিক ও কবলাকৃত জমি জবরদখল করে আছে। এতিম তানজিদাদের কোন আয়ের উৎস না থাকায় পৈত্রিক জমি বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বললে ফুফু ও চাচা মিজানুর রহমান কোন কর্নপাত না করে তানজিদা ও তার স্বামী মনিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির করতে থাকে। ২৪ আগস্ট চাচা মিজানুর রহমান ও চাচি খাদিজা আক্তার হেপীর প্রভাব খাটিয়ে তানজিদার নিজ জমির চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে শিল্পী ঘর তৈরী করতে গেলে তানজিদা বাঁধা প্রদান করলে চাচা ও চাচির প্রভাব খাটিয়ে ফুফু মিতা রানী শিল্পী বাদী হয়ে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে জি,আর ২৪১/২৪ (বর) ও ২২৮/২৪ (বর) মামলা দায়ের করে। ইতোপূর্বে মিজানুর রহমান ও খাদিজা আক্তার হেপীর প্রভাব খাটিয়ে মিতা রানী শিল্পী তার বোনদের নিয়ে অন্যান্য ওয়ারিশদের ও এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে। তানজিদা ও তার স্বামী মনিরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে শিল্পী বরগুনা থানাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করতে থাকে। নিজ চাচা ও ফুফুদের আক্রমনের প্রতি ঘন্টায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছে বলে মনের কষ্ট নিয়ে অভিযোগ করেণ তানজিদা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপ-সচিব মিজানুর রহমান বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তাহা সম্পূর্ন মিথ্যা। আমি সরকারী চাকুরী করি আমি তেমন জমি-জমা সর্ম্পকে জানিনা। তার পরও আমি বিরোধ নিরেশনে এলাকায় মিমাংসার জন্য অনেকবার গিয়েছি কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।
উল্লেখ্য তানজিদার বাবা মারা যাওয়ার পর দাদী রোকেয়া বেগম ফিরোজা ১৪ মার্চ ২০২২ সালে পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে তার ছেলে মৃত: তানভীর রহমান খোকন এর অপমৃত্যুর ঘটনায় সংবাদ সম্মেল করে বলেন, আমি একজন মা। আমার গর্ব জাত সন্তানের দ্বারা আমি নির্যাতিত। কাউকে বলতে পারছিনা। ওই সচিব ছেলের নির্যাতনের কষ্টে এবং মেয়েদের নির্যাতনে আমার বড় ছেলে তানবীর রহমান খোকন বিষ পানে আত্মহত্যা করে