ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত-১০ ॥ সবার বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুরে

মোঃ সোহানুর রহমান সোহাগ, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ২টি ইউনিয়নে চলছে এখন শোকের মাতম। স্বজন হারানো কান্নায় ভারি হয়ে উঠছে সীমান্তের কয়েকটি গ্রাম। ডুকরে ডুকরে কান্নার আওয়াজ আসছে ঘর থেকে। সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। গতকাল রোববার সকালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন একই পরিবারের ৬ জনসহ মোট ১০ জন। সবার বাড়ি মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ও কাজিরবেড় ইউনিয়নে। নিহতরা হলেন ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান সভাপতি বাগানমাঠ গ্রামের এ্যাড. আব্বাস আলী, তার ভাগিনা মাইক্রোবাস চালক আল আমিন, ভৈরবা গ্রামের মিয়াজান বিবি (৬৬), মেয়ে আমেনা খাতুন, পুত্রবধূ কুটি বিবি, পোতা জামাই জুয়েল হোসেন, পুতনি মরিয়ম নেছা ও তার ৫ বছরের শিশু এবং নিকটাত্মীয় সামন্তা গ্রামের নজরুল ইসলাম। খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক মন্ডল জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মিয়াজান বিবির ছেলে মোহর আলী ২০১৪ সালে স্ত্রী, ছেলে মেয়ে রেখে ঢাকার সাভারে বসবাস করতেন। সেখানে তিনি হিজড়াদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে তাদের মতোই জীবনযাপন শুরু করেন। হিজড়াদের দলে থেকে বিপুল সম্পদের মালিক হন মোহর আলী। ব্যাংকে এই টাকা গচ্ছিত আছে। ২০২০ সালে মোহর আলী মারা যান। ছেলের এই টাকার মালিকানা দাবী করেন বৃদ্ধা মিয়াজান বিবি।
আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে দুইজন আইনজীবী নিয়ে গতকাল রোববার মিয়াজান বিবির পরিবার ঢাকার সাভারে যাচ্ছিলেন। সকাল ৭টার দিকে তাদের বহনকৃত মাইক্রোবাসটি মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় দুর্ঘটনায় পতিত হয়। একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষে দুমড়ে মুচড়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ৬ জন ও হাসপাতালে নেয়ার পর আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়। পরে ফরিদপুর হাসপাতাল থেকে আব্দুল্লাহ (১২)কে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেলের উদ্দেশ্যে পাঠানো হলে পথে তার মৃত্যু হয়। এখনো ৩ জন ঐ হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি আছে, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। এই মৃত্যুর খবর মহেশপুরের বাগানমাঠ, সামন্তা ও ভৈরবা গ্রামে ছড়িয়ে পড়লে শোকের ছায়া নেমে আসে। দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহেশপুর উপজেলা বিএনপির নেতা আনিছুর রহমান রিপন গতকাল রোববার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের জানান, তারা লাশ নিয়ে মহেশপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। লাশের সঙ্গে নিহতদের আত্মীয়স্বজনও রয়েছেন।