ফরিদপুরের মধুখালীতে হাজারো পাটচাষীর পাশে দাঁড়ালেন ইউপি চেয়ারম্যান

ফরিদপুর প্রতিনিধি : পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাব ও খরার কারণে ফরিদপুরের খাল, বিলসহ নিচু জলাভূমিতে নেই পর্যাপ্ত পানি। এতে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন পাটচাষীরা। কেউ কেউ ভ্যান, ঘোড়ার গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে মাইলের পর মাইল দূরে নদীতে পাট পঁচানোর ব্যবস্থা করছেন। এতে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার সে সুযোগও পাচ্ছেন না। পাট পঁচানো নিয়ে এমন হাহাকার চলাকালে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার গাজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম কিবরিয়া।
উপজেলার গাজনা ইউনিয়নের কুমার নদের শাখা খালের শ্রিনাথপুর থেকে বেলেশ্বর মাঝি বাড়ী পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার খালে ১৮টি অগভীর নলকূপ দিয়ে একযোগে পানি সরবরাহ করছেন তিনি মাঝিবাড়ী খালে। গত শনিবার দুপুর ১২টায় শ্রীনাথপুর মাঠে বটতলায় এ কাজের উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিকুর রহমান চৌধুরী। এসময় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আলভীর রহমান, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পবিত্র কুমার দাস, বিআরডিবি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার দত্ত, গাজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম কিবরিয়া, ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মোঃ আলীম মোল্যা, ইউপি উদ্যোক্তা অমিত কুমার ও স্থানীয় চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।
গাজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত এমন কৃষকবান্ধব উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় পাটচাষীরা।
চাষীরা জানান, এতে তাদের পাটের উৎপাদন খরচ বাড়বে না। ফলে লাভবান হবেন তারা। তারা আরও জানান, পাট কাটার সময় হয়ে গেলেও পানির অভাবে তারা পাট কাটতে পারছিলেন না। সময়মতো পাট কাটতে না পারলে পাট শুকিয়ে উৎপাদনে প্রভাব পড়বে। এসময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোয় স্থানীয় চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ জানান তারা।
গাজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া জানান, এর আগে গত মঙ্গলবার তিনি চন্দনা নদীর শাখা খালের মান্দার তলার ব্রিজ হতে চিত্রার ব্রিজ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার খালে পানি সরবরাহ করেন। তিনি জানান, জনপ্রতিনিধি হিসেবে কৃষকদের দুর্দশার কথা চিন্তা করে তাদের পাশে দাঁড়াতেই এমন উদ্যোগ নেন। গোলাম কিবরিয়া আরো জানান, এই খালে পানি সরবরাহের কারণে উভয় প্রান্তের সাত শতাধিক পাটচাষী উপকৃত হবেন।
মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিকুর রহমান চৌধুরী জানান, পর্যাপ্ত পানির অভাবে এ উপজেলার কৃষকরা পাট পঁচানো নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। অনেকে আবার কর্দমাক্ত পানিতে অধিক পরিমাণ পাট গাদাগাদি করে জাগ দেয়ায় রংও নষ্ট হয়, এতে তারা ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকেও বঞ্চিত থাকেন। পাট চাষীদের এমন দুঃসময়ে গাজনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়ার আশা জাগানো উদ্যোগ চাষীদের আশার আলো দেখাচ্ছে। তিনি বলেন, এ উদ্যোগ মডেল হতে পারে।
উল্লেখ্য, এ বছর ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ৮ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।