পাথরঘাটায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১ জনের মৃত্যু, আসামীরা এলাকাছাড়া

পাথরঘাটা (বরগুনা) প্রতিনিধি
জমি-জমা সংক্রান্ত মারামারির ঘটনায় আহত উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের জালাল হাওলাদার (৫৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর বেলা ১২টার দিকে মারা গেছেন। এ ঘটনায় মামলার পরে অভিযুক্তরা এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনায় প্রতিপক্ষের হামলায় মারাত্মক আঘাত পান জালাল হাওলাদার। দীর্ঘ ২ মাস চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থাতেই মারা যান বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়। মৃত জালাল হাওলাদার উপজেলার রায়হানপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত আঃ ছায়েদ হাং এর পুত্র। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী মৃত জালাল হাওলাদারের বড় ছেলে রিমন (২২) জানান, আমরা দীর্ঘদিন বাড়িতে ছিলাম না। দাদার দেয়া জমিতে ঘর তুলতে আমরা বাড়িতে আসি। ঘর তোলা নিয়ে আমার চাচার সাথে দ্বন্দ্ব হয় এবং এ নিয়ে কয়েকবার সালিশ ব্যবস্থা হয়। তবে কোনক্রমেই তারা আমাদেরকে জমি দিতে রাজি না থাকায় আমরা আমাদের জমিতে বসতঘর তুলি। একপর্যায়ে গত ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৬টার দিকে আমার চাচা ও আরো ২৫ থেকে ৩০ জন লোক অতর্কিতভাবে আমাদের বসতঘরে হামলা চালায়। এসময় আমাকে আমার বাবাকে মেরে জখম করে। হামলার একপর্যায়ে আমার বাবার মাথায় আঘাত করে তাতে ২০টি সেলাই লাগে। হাতুড়ি দিয়ে বাবার পা ভেঙে দেয়। আমার মা তাছলিমা বেগমকেও গুরুতর আহত করে। আমাদের ঘরে থাকা টাকাসহ স্বর্ণালংকার লুটে নেয়। তাৎক্ষণিক পাথরঘাটা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখান থেকে আমার বাবাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল পাঠানো হয়। সেই থেকে গত ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত আমার বাবা কোনরকম জীবিত ছিলো।
রিমন জানান, চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৩ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টায় তার বাবার মৃত্যু হয়। এমনকি বাবার লাশ দাফন দিতে কবর খুঁড়তেও আসামী পক্ষ বাঁধা দেয়। তিনি মৃত বাবার হত্যাকারীদের সঠিক বিচারের জন্য গত ২৫ নভেম্বর ১৯ জন নামযুক্ত এবং ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা আসামীর নামে মামলা করেন। মামলা নম্বর-১৩/১১৭।
অপরদিকে, আসামীপক্ষের কাউকেই এলাকায় কিংবা বাড়িতে পাওয়া যায়নি। যার ফলে তাদের কোন বক্তব্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলার ১০ নম্বর আসামী করিম সিকদারের ছেলে রাজু জানান, আমাকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। আমি মারামারি অথবা কোন পরামর্শেও ছিলাম না। আমি বাড়িতেই ছিলাম। মৃত জালাল হাওলাদার আহত অবস্থায় তার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে সহযোগিতা করেছি। এমনকি বাদীপক্ষের মুখে বিগত দিনেও আমার নাম শোনা যায়নি। হঠাৎ করেই আমাকে আসামী করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কোনভাবেই জড়িত নই।