পদ্মার ভাঙন প্রতিরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে ধীরগতিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় হঠাৎ করে রাক্ষুসী পদ্মা নদীর থাবায় একরাতে দেড় কিলোমিটার নদীগর্ভে চলে গেছে। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে এলাকার মানুষ। বেজগাঁও, গাঁওদিয়া, লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের নদীর পাড়ের মানুষের আতঙ্ক কাটছে দিন ও রাত। বেজগাঁও ২নং, ৩নং ওয়ার্ড, গাঁওদিয়া ১নং ওয়ার্ড ও তেউটিয়া ৬নং ওয়ার্ডের নদী তীরবর্তী স্থানগুলোর প্রায় দেড় কিলোমিটার ভাঙনের শিকার। এলাকার মানুষ তাদের শেষ সম্বলটুকু রক্ষা করতে না পেরে কেঁদেছেন অনেকেই। তবে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধির তৎপরতা এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় দ্রুতগতিতে বালি ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার কাজ করতে দেখা গেছে। বেজগাঁও ২নং ওয়ার্ডে নদী তীরবর্তী স্থানে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্প।
গতকাল শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ১৫-২০ জন মিলে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধে চেষ্টা করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ পরিদর্শন করছেন। নতুন করে ভাঙনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে বাতাস থাকলে নদীর ঢেউয়ে পাড়ের মাটি ভেঙ্গে পড়ছে নদীতে।
বেজগাঁও ইউনিয়ন এবং লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধি অনেকেই জানান, গত দু’দিন যে ক্ষতি হয়েছে বতর্মানে জিও ব্যাগ ফেলেছে বলে কিছুটা ভাঙন প্রতিরোধ হয়েছে। তবে বৃষ্টি থাকায় শ্রমিকদের কাজের সমস্যা হয়েছে। আশা করি, আরো দুইদিন কাজ করলে ভাঙন রোধে ব্লক তৈরি হয়ে যাবে। জিও ব্যাগ ফেলার কাজও হচ্ছে ধীরগতিতে।
লৌহজং-তেউটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী মো. রফিকুল ইসলাম মোল্লা বলেন, লৌহজং প্রশাসনসহ আমি উপস্থিত থেকে ভাঙন রোধে আন্তরিকভাবে কাজ করছি। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের ডাকে সাড়া দিয়ে জিও ব্যাগ ফেলছে। গত তিনদিন যাবৎ এলাকার জনগণের পাশে থেকে কাজ করছি। গত বুধবার ভাঙন ধরে এলাকায়। তবে নতুন করে ভাঙনের এ পর্যন্ত কোন খবর পাইনি। জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, লৌহজংয়ে নদীর তীরবর্তী স্থানে নদী ভাঙনের খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন শেষে আমাদের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহযোগিতায় অতি দ্রুত গতিতে নদীতে ভাঙন এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। জিও ব্যাগ দিয়ে ব্লক তৈরি করা হবে ভাঙন রোধে।
এসময় তিনি আরো বলেন, বর্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত, অতি বৃষ্টি ও ঢেউয়ের তোড়ে কিছু ভাঙন বেড়েছে। ভাঙন রোধে দ্রুতগতিতে ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রণেন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী জানান, এ ভাঙন প্রাকৃত্রিক নয়। এটি কৃত্রিম সংকট। বর্তমানে নদীতে প্রতিদিন পানি বাড়ছে। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে ভাঙন রোধ এবং সাধ্যমত চেষ্টা করছি জিও ব্যাগ ফেলে ব্লক তৈরি করে ভাঙন থেকে এলাকার মানুষের জমি ও ভিটা মাটি রক্ষা করতে। দুই-একদিনের মধ্যে স্থানগুলো পরিদর্শন শেষে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।