কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
কুষ্টিয়ায় দুই যুবককে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে র্যাব এক অভিযান চালিয়ে চাঁদাবাজ চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার সময় কুষ্টিয়া র্যাব-১২ সিপিসি-১ ক্যাম্পের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান এ তথ্য জানান। প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, গতকাল সোমবার (২৭ডিসেম্বর) কুষ্টিয়া সদরের জগতি এলাকার একটি বাড়িতে দুই যুবককে অনৈতিক কাজের প্রলোভন দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ আসে। অভিযোগের ভিত্তিতে এদিন জগতি এলাকার ঐবাড়িতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে জগতি গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের মেয়ে মোসাঃ রেহেনা আক্তার ফরিদা খাতুন ওরফে বুড়ি(৪০), চৌড়হাস ফুলতলা এলাকার মৃত জাফর আলীর মেয়ে কুসুম খাতুন কাজল (২৫), একই এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে তরিকুল ইসলাম (৩০), মৃতঃ আব্দুর রশিদের ছেলে রাসেল আহমেদ(৩০), কলেজ মোড় এলাকার আইয়ুব মালিথার ছেলে মোঃ আলেক চাঁদ (২৪) , ডিসি কোর্ট এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে আবির হাসান স্বাধীন(১৯) এবং জগতি এলাকার ঝন্টু শেখের ছেলে মোঃ পারভেজ শেখ ( ২২ ) আটক করতে সক্ষম হয়। এসময় ঐ বাড়ি হতে জিম্মিকৃত দুই যুবক তামিমুজ্জামান চৌধুরী (৩০) ও মোঃ মারজান হোসেন মিয়া (৩৯) কে উদ্ধার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃত ৩ জনের মোবাইল ফোন হতে জিম্মি দুই যুবকের নগ স্থিরচিত্র ও ভিডিও উদ্ধার করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বাড়ির মালিক মোসাঃ রেহেনা আক্তার ও কুসুম খাতুন কাজল স্বীকার করেন যে , উঠতি বয়সের যুবকদের বাড়িতে ডেকে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে তা পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঠানো এবং ইন্টারনেটে প্রকাশের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের উদ্দেশ্যে তারা এ ধরণের কাজ করতো। তাদের এ কাজে সহায়তা করতো এলাকার কিছু স্থানীয় সাংবাদিক। আটককৃত রেহেনা আক্তার প্রথমে মোবাইল ফোনে যুবকদের বাড়িতে ডেকে এনে আগে থেকে বাড়িতে অবস্থান করা পতিতার সাথে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে দিত। কিছুক্ষণের মধ্যে সাংবাদিক নামধারী কয়েকজন যুবক সেই কক্ষে ঢুকে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করতো। যুবকরা বাধা দিতে চাইলে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা এ ধরণের ভিডিও ধারণ করতো। গ্রেফতারকৃত তরিকুল , রাসেল , আলেক চাঁদ ও স্বাধীন স্থানীয় দৈনিক সময়ের, দিগন্ত ও বিজয়ের বাণী পত্রিকায় সাংবাদিকতার কাজ করে । তাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিকতার নাম ভাঙিয়ে এ ধরণের চাঁদাবাজির অনেক অভিযোগ রয়েছে । গ্রেফতারকৃত রেহেনা আক্তার এর মোট ৩টি বিয়ে হয়েছে। ১ম স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি আরও ২টি বিয়ে করেছেন । ৩য় স্বামী বিয়ের পর রেহেনা আক্তার এর চারিত্রিক ত্রুটির কথা জানতে পারেন । স্ত্রীকে শোধরানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে তিনি রেহেনা আক্তারকে তালাক দেন । দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে রেহেনা আক্তার নিজ বাড়িতে বাস করেন । তিনি গত কয়েক বছর যাবত নিজ বাড়িতে এ ধরণের অনৈতিক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। প্রায় ৬/৭ বছর পূর্বে তিনি মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে ১ বছর কারাভোগ করেন। স্কোয়াড্রন লীডার কোম্পানি কমান্ডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, ধৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।