আলীকদমে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আটক

হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি : বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার একমাত্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর দায়ের করা এজাহারে আটক করা হয়েছে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বদিউল আলম (৪৮) কে। গতকাল বুধবার শিক্ষক বদিউল আলমকে আদালতে সোপর্দ করেছে আলীকদম থানা। বিষয়টি নিশ্চিত করে আলীকদম থানার অফিসার ইনচার্জ খন্দকার তবিদুর রহমান বলেন, আমরা বাদীর এজাহারের ভিত্তিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা নিয়েছি এবং ১নং অভিযুক্ত আসামী প্রধান শিক্ষক বদিউল আলমকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করেছি। আলীকদম থানার মামলা নম্বর-০১, তারিখ ০৩/০৭/২০২৪ খিঃ।
দায়েরকৃত এজাহারে বর্ণিত, গত ৯ মে বাদী শামিমা জান্নাত-১৪ (৯ম শ্রেণির ছাত্রী) যথানিয়মে তার অপরাপর বান্ধবীদের সাথে বিদ্যালয়ে আসে। সকাল ৯টা ১০ মিনিটে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে তার থাকার (আবাসিক) কক্ষে ডেকে নিয়ে রুম এবং থালা-বাসন পরিষ্কার করতে বলে। বাদী/শিক্ষার্থী অনিচ্ছাসত্ত্বেও শিক্ষকের প্রতি সম্মান দেখিয়ে শিক্ষকের আদেশ পালন করে। একপর্যায়ে শিক্ষক বদিউল আলম (৪৮) তাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে ওই ছাত্রীর আপত্তিকর স্থানে স্পর্শ করতে থাকে। অনেক জোর জবরদস্তি করে বাদী নিজেকে ছাড়াতে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে এজাহারে বর্ণিত সাক্ষীগণ (বাদীর বান্ধবী) বাদীকে খুঁজতে খুঁজতে প্রধান শিক্ষকের রুমের পাশে এলে প্রধান শিক্ষক তাকে ছেড়ে দেয় এবং সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এই ঘটনার পর থেকে যৌন লালসাদার প্রধান শিক্ষক প্রায় ওই শিক্ষার্থীকে বাজে ইঙ্গিত দিতো এবং তাকে অসৎ উদ্দেশ্যে তার থাকার কক্ষে ডাকতো। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী (বাদী) লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি এতদিন গোপন করে আসছে। শিক্ষার্থী (মামলার বাদী) প্রধান শিক্ষকের প্রস্তাবে দীর্ঘদিন সাড়া না দেওয়ায় গত ৮ জুন ওই শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীর পিতা-মাতা টিসি দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে শিক্ষার্থী নিরুপায় হয়ে বাবা-মায়ের কাছে সব কথা খুলে বলে এবং বাবা-মা পারিবারিক সিদ্ধান্তমতে অত্র এজাহার দায়ের করে। এজাহারে বর্ণিত অপর বিবাদী একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ বাবলুর রহমান জোবাইর (৩৩) বর্তমানে পলাতক। তবে এজাহারে ২নং বিবাদীর বিষয়ে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ধুংড়ি মং মার্মা বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। গত ১৫ মে আমরা কমিটির সমাপনী সভা করে কমিটির কার্যক্রম শেষ করেছি। সুতরাং এ বিষয়ে আমার কোন কিছু জানা নেই। উল্লেখ্য, গত ৯ মে এজাহারে বর্ণিত বাদীকে যৌন হয়রানি করা হয়।